মার্চ ৯, ২০২০
পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিং: তৃতীয় স্বামীর দেওয়া আগুনেই পুড়েই মারা গেলেন বিউটিশিয়ান ফারহানা আক্তার রত্না
নিজস্ব প্রতিনিধি: তৃতীয় স্বামীর দেওয়া আগুনেই পুড়ে মারা গেলেন বিউটিশিয়ান ফারহানা আক্তার রতœা (২৬)। স্বামী হাসিবুর রহমান সবুজ সু-পরিকল্পিতভাবে ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে তাকে পুড়িয়ে হত্যা করে। সোমবার (৯ মার্চ) সকালে পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে প্রেস ব্রিফিং -এ এমন তথ্য জানালেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাাফিজুর রহমান। হাসিবুরের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার মালোত গ্রামের রোকন উদ্দীন সরদারের মেয়ে ফারহানা আক্তার রতœার আগে দুটি বিয়ে হয়েছিলো। রতœার ৮ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তৃতীয় স্বামী হাসিবুর রহমান সবুজ মেরিকো বাংলাদেশ লিমিটেড এর একজন কর্মী। তার বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার খাসমথুরাপুর গ্রামে। বাবার নাম আব্দুস সাত্তার। রতœা পেশায় বিউটিশিয়ান। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে রতœাকে বিয়ে করার পর সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মোবারকপুর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতো সবুজ। রতœার ২য় স্বামী খুলনার ডুমুরিয়া থানার চারাবটতলা এলাকার মিজানুর রহমানের সাথে রতœার ৩/৪ টি মামলা চলছে। মিজানুরের প্রতি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য রতœা হাসিবুরের ওপর চাপ সৃষ্টি করতো। র্যাব দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া জন্য, এমনকি পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথাও বলতো রতœা। এসব বিষয় নিয়ে রতœার সাথে হাসিবুরের প্রায়ই ঝগড়া ও মনোমালিন্য হতো। তিনি বলেন, এক পর্যায়ে মিজানুরের দোকান ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য বর্তমান স্বামী হাসিবুর রহমান সবুজ গত ২০ ফেব্রæয়ারি রাতে জনৈক কবির হোসেনের ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলে তালা বাজার থেকে ৩ লিটার পেট্রোল কিনে নিয়ে আসে। এরপর ভিকটিম রতœা অস্থির হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে রাত ১ টার দিকে হাসিবুর ঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে রাখে। এসময় ফারহানার শরীর আগুনে ঝলসে যায়। পরে হাসিবুর ঘর মালিকসহ আশপাশের লোকজনদের ডেকে নিয়ে আসে। রতœাকে মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে তালা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে ওই দিনেই তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৪ মার্চ রতœার মৃত্যু হয়। পুলিশ সুপার আরো জানান, রতœা আগুনে দগ্ধ হওয়ার পর ২৪ ফেব্রæয়ারি তার বাবা রোকন উদ্দীন বাদী হয়ে তালা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় সাবেক স্বামী মিজানুর রহমানসহ কয়েকজনকে আসামী করা হয়। কিন্তু ঘটনাটি প্রথম থেকেই পুলিশের কাছে রহস্যজনক মনে হয়। গোপনে তদন্তের একপর্যায়ে ঘটনার আসল কারণ উদঘাটন করা হয়েছে এবং প্রকৃত অপরাধী বর্তমান স্বামী হাসিবুর রহমান সবুজকে গ্রেফতার করা হয়। ইতোমধ্যে হাসিবুর আদালতে ১৬৪ ধারায় নিজের অপরাধ স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। প্রেস বিফ্রিং এর সময় পুলিশ সুপার ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইলতুৎমিশ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) জিয়াউর রহমান, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু আহমেদ, মনিরুল ইসলাম মিনি, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক এবিএম মোস্তাফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, অর্থ সম্পাদক আবুল কালাম, দপ্তর সম্পাদক আহসানুর রহমান রাজিব, নির্বাহী সদস্য রামকৃষ্ণ চক্রবর্তীসহ প্রেসক্লাবের অন্যান্য কর্মকর্তা-সদস্য ও পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 8,475,877 total views, 605 views today |
|
|
|